বিশ্ব ইজতেমার বিস্তারিত ইতিহাস ও বিবরণ
বিশ্ব ইজতেমা ইসলাম ধর্মের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ, যা প্রতিবছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়। এটি মূলত তাবলিগ জামাতের উদ্যোগে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান, যেখানে লাখো মুসল্লি আত্মশুদ্ধি, ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনায় একত্রিত হন।
ইজতেমার উৎপত্তি ও ইতিহাস
১. ইজতেমার সংজ্ঞা ও অর্থ
"ইজতেমা" শব্দটি আরবি "إجتماع" (ইজতেমা) থেকে এসেছে, যার অর্থ হলো "সমাবেশ" বা "একত্রিত হওয়া"। এটি সাধারণত ধর্মীয়, দাওয়াতি ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে বৃহৎ পরিসরে মুসলমানদের একত্রিত হওয়ার একটি অনুষ্ঠান বোঝায়।
২. তাবলিগ জামাত ও ইজতেমার সূচনা
তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি (১৮৮৫-১৯৪৪)। ১৯২৭ সালে ভারতের মেওয়াত অঞ্চলে তিনি ইসলামের মূল শিক্ষা প্রচারের জন্য এই আন্দোলন শুরু করেন। তার নেতৃত্বে ধীরে ধীরে তাবলিগ জামাত মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রথমবারের মতো ইজতেমা শুরু হয় ১৯৪৬ সালে ভারতের ভোপালে, যা মূলত স্থানীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরে ১৯৪৮ সালে এটি বাংলাদেশে কাকরাইল মসজিদের মাধ্যমে প্রসার লাভ করে।
বিশ্ব ইজতেমার বাংলাদেশে বিকাশ
১. প্রথম বিশ্ব ইজতেমা (১৯৫৪)
- প্রথমবারের মতো ১৯৫৪ সালে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে ছোট আকারে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
- পরে এর পরিধি বাড়তে থাকে এবং ১৯৬৭ সালে এটি টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে স্থানান্তরিত হয়।
- বর্তমানে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জমায়েত (হজের পর)।
২. টঙ্গীর ইজতেমার বিবর্তন
- ১৯৬৭ সাল থেকে এটি টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
- ২০১১ সাল থেকে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই পর্বে বিভক্ত করা হয়।
- বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থা ইজতেমার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে।
বিশ্ব ইজতেমার মূল উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম
১. ইজতেমার মূল উদ্দেশ্য
- ইসলামী জীবনব্যবস্থার প্রচার ও প্রসার।
- মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য ও সংহতি স্থাপন।
- আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও আত্মশুদ্ধি।
- ঈমান ও আমলের উন্নতি সাধন।
- দুনিয়াবি লোভ-লালসা ত্যাগ করে ইসলামী দাওয়াতের কাজে আত্মনিয়োগ।
২. ইজতেমায় গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম
- বয়ান: ইসলামের মূল শিক্ষা ও দাওয়াত সম্পর্কিত আলোচনা।
- দোয়া ও মুনাজাত: সমগ্র বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
- চিল্লা ও দাওয়াতি কার্যক্রম: মুসল্লিরা ইসলামের দাওয়াতি কাজের জন্য ৪০ দিনের চিল্লা, ৪ মাস বা ১ বছরের জন্য বের হন।
- বায়আত গ্রহণ: অনেক মুসল্লি ইসলামী আদর্শ মেনে চলার অঙ্গীকার করেন।
- নিষ্পত্তি সভা: শেষ দিনে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।
বিশ্ব ইজতেমার বৈশিষ্ট্য
১. রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা
- এটি কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনের অংশ নয়।
- মুসল্লিরা শুধুমাত্র ইসলামের প্রচার ও আমলের উন্নতি সাধনের জন্য অংশ নেন।
২. অংশগ্রহণকারীদের বৈচিত্র্য
- বিশ্বের শতাধিক দেশ থেকে লক্ষাধিক মুসল্লি এখানে আসেন।
- বিভিন্ন ভাষা, বর্ণ, জাতি ও সামাজিক অবস্থানের মানুষ একত্রিত হন।
৩. সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবক ভিত্তিক পরিচালনা
- ইজতেমার যাবতীয় কাজ স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
- তাবলিগ জামাতের সদস্যরা নিজ উদ্যোগে কাজ করে থাকেন।
৪. সুশৃঙ্খল পরিবেশ
- লাখো মানুষের সমাবেশ হলেও পুরো অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়।
- স্বাস্থ্য, খাবার ও অন্যান্য পরিষেবা অত্যন্ত সুসংগঠিত।
বিশ্ব ইজতেমার বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
১. বর্তমান সময়ে ইজতেমা
- বর্তমানে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে বিভক্ত হয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
- এটি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রূপ নিয়েছে, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ অংশগ্রহণ করে।
- বাংলাদেশ সরকার ইজতেমার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
২. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
- অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বাড়ায় ইজতেমার পরিধি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
- বিশ্ব ইজতেমাকে আরও সুসংগঠিত ও আধুনিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালিত করার চেষ্টা চলছে।
বিশ্ব ইজতেমার গুরুত্ব ও প্রভাব
১. মুসলিম উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠা
- এটি বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি মিলনমেলা হিসেবে কাজ করে।
- বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের দাওয়াত ও শিক্ষা বিনিময়ের সুযোগ তৈরি হয়।
২. দাওয়াত ও তাবলিগের প্রসার
- ইজতেমার মাধ্যমে ইসলামের বার্তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
- মুসল্লিরা নিজ নিজ দেশে ফিরে গিয়ে ইসলামের প্রচার কাজে নিয়োজিত হন।
৩. নৈতিক ও আত্মিক উন্নতি
- ইজতেমার মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যক্তিগতভাবে ইসলামকে আরও গভীরভাবে অনুশীলন করা।
- মুসল্লিরা এখান থেকে আত্মশুদ্ধির শিক্ষা নিয়ে যান।
উপসংহার
বিশ্ব ইজতেমা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় জমায়েত নয়; এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণের কেন্দ্র। লক্ষ লক্ষ মানুষের মিলনমেলা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও ইসলামের সঠিক শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে এটি মুসলিম সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে আসছে।
বিশ্ব ইজতেমার বিস্তারিত ইতিহাস ও বিবরণ
বিশ্ব ইজতেমা (Tablighi Ijtema) বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ, যা প্রতিবছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়। এটি মূলত তাবলিগ জামাত আন্দোলনের অংশ, যা মুসলমানদের ইসলামী জীবনধারা ও আত্মশুদ্ধির শিক্ষা দেয়ার জন্য পরিচিত।
১. বিশ্ব ইজতেমার উৎপত্তি ও বিকাশ
(ক) ইজতেমার সূচনা ও প্রাথমিক ইতিহাস
বিশ্ব ইজতেমার শেকড় মূলত ভারতের তাবলিগ জামাত আন্দোলনের মধ্যেই নিহিত। তাবলিগ জামাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯২৭ সালে, ভারতের মেওয়াত অঞ্চলে, শেখ মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি (রহ.) এর নেতৃত্বে।
তিনি মুসলমানদের ধর্মীয় ও নৈতিক উন্নতি ঘটানোর জন্য দাওয়াত ও তাবলিগের ধারণা প্রচার শুরু করেন। তার এই আন্দোলন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ১৯৪৬ সালে ভারতের ভোপালে প্রথম বৃহৎ আকারে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
(খ) বাংলাদেশে ইজতেমার শুরু
- ১৯৪৮ সালে ঢাকার কাকরাইল মসজিদ তাবলিগ জামাতের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
- ১৯৫৪ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়, যা ছিল ছোট আকারের।
- ১৯৬৭ সাল থেকে গাজীপুরের টঙ্গীতে ইজতেমা স্থায়ীভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২. বিশ্ব ইজতেমার উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম
(ক) প্রধান উদ্দেশ্য
বিশ্ব ইজতেমার মূল লক্ষ্য হল:
- মুসলমানদের ঈমান, আমল ও চরিত্র সংশোধন করা।
- ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও দাওয়াত প্রচার করা।
- বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি করা।
- আত্মশুদ্ধি ও পরকালীন মুক্তির দীক্ষা প্রদান।
- অহিংস, শান্তিপূর্ণ ও ধর্মীয় পরিবেশ তৈরি করা।
(খ) বিশ্ব ইজতেমার মূল কার্যক্রম
বিশ্ব ইজতেমায় সাধারণত নিচের কার্যক্রমগুলো অনুষ্ঠিত হয়—
✅ তাফসির ও বয়ান: ইসলামিক আলোচনাসভা যেখানে কুরআন, হাদিস ও ইসলামের মূল শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
✅ আম বয়ান (সাধারণ আলোচনা): বিশ্বখ্যাত আলেমরা ইসলামের মূলনীতি, দাওয়াত ও আমলের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
✅ তাবলিগী সফরের পরিকল্পনা: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলাম প্রচারের জন্য জামাত তৈরি করা হয়।
✅ আখেরি মুনাজাত: সমাপ্তির দিনে লাখো মুসলমান আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি ও দোয়া করে।
৩. বিশ্ব ইজতেমার বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব
(ক) বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ
বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ (প্রথমটি হচ্ছে হজ)। এতে লাখো মুসলমান অংশ নেন, এবং বিশ্বব্যাপী তাবলিগ জামাতের সদস্যরা এখানে উপস্থিত হন।
(খ) সম্পূর্ণ রাজনৈতিক মুক্ত ও অহিংস সমাবেশ
বিশ্ব ইজতেমা কোনো রাজনৈতিক বা বিদ্বেষপূর্ণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। এটি সম্পূর্ণরূপে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অনুষ্ঠিত হয়।
(গ) আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ
বিশ্ব ইজতেমায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, আমেরিকা, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের প্রায় ১৫০+ দেশের মুসলমানরা অংশগ্রহণ করেন।
৪. বিশ্ব ইজতেমার ধাপ ও সময়সূচি
(ক) বর্তমান ফরম্যাট ও দুই পর্বে বিভক্তকরণ
বিগত কয়েক দশকে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ২০১১ সাল থেকে ইজতেমা দুই ধাপে বিভক্ত করা হয়।
🔹 প্রথম পর্ব: সাধারণত তাবলিগ জামাতের মূলধারার অনুসারীরা অংশ নেন।
🔹 দ্বিতীয় পর্ব: অন্য অংশগ্রহণকারীরা অংশগ্রহণ করেন, বিশেষ করে বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা।
(খ) সময়সূচি (সাধারণত ৩ দিন)
প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় এবং এটি তিন দিন ধরে চলে।
- ১ম দিন: ফজরের নামাজের পর বয়ান ও দোয়া।
- ২য় দিন: বিশেষ আলোচনা, আত্মশুদ্ধি ও ধর্মীয় দীক্ষা।
- ৩য় দিন: আখেরি মোনাজাত (শেষ দোয়া), যেখানে লাখো মানুষ আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
৫. বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
(ক) আয়োজক সংস্থা
বিশ্ব ইজতেমার প্রধান আয়োজক বাংলাদেশ তাবলিগ জামাত, যাদের প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ, ঢাকা।
(খ) নিরাপত্তা ব্যবস্থা
বিশ্ব ইজতেমার সময় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়—
✅ বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করে।
✅ বিশেষ মেডিকেল ক্যাম্প ও ফায়ার সার্ভিস রাখা হয়।
✅ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিসিটিভি ও মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
৬. বিশ্ব ইজতেমার প্রভাব ও গুরুত্ব
(ক) মুসলমানদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন
- ইজতেমার মাধ্যমে হাজারো মানুষ ইসলামের সঠিক পথে ফিরে আসে।
- বিশ্বব্যাপী তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হয়।
- মানুষের মধ্যে ধৈর্য, শৃঙ্খলা ও আত্মশুদ্ধির অভ্যাস গড়ে ওঠে।
(খ) বিশ্ব মুসলিম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ
- ইজতেমায় বিশ্বের বিভিন্ন জাতি ও ভাষার মানুষ একত্রিত হন, যা মুসলিম ঐক্যের প্রতীক।
- বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসলমানদের মধ্যে ইসলামী দাওয়াতের প্রসার ঘটে।
উপসংহার
বিশ্ব ইজতেমা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় সমাবেশ নয়, এটি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর আত্মশুদ্ধি ও ঐক্যের অন্যতম বৃহৎ প্ল্যাটফর্ম। এটি মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা ও ইসলামের প্রচারকে উৎসাহিত করে।
আপনি যদি আরও বিস্তারিত কিছু জানতে চান বা বিশেষ কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে জানান! 😊
আপনি যদি আরও নির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানতে চান, তাহলে বলতে পারেন!
.jpeg)
0 Comments