আওয়ামী লীগ কতবার নিষদ্ধি হয়েছে


 
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে কয়েকবার নিষিদ্ধ বা কার্যত নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পড়েছে, বিশেষ করে সামরিক শাসন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়। নিচে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো:
আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ বা নিষ্ক্রিয় হওয়ার ঘটনাগুলোর পটভূমি ও প্রেক্ষাপট বিস্তারিতভাবে নিচে তুলে ধরা হলো।


🔴 ১. ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও পরবর্তী সামরিক শাসন (আওয়ামী লীগের কার্যত নিষ্ক্রিয়তা)

✅ প্রেক্ষাপট:

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে সমাজতান্ত্রিক পথে পরিচালনার লক্ষ্যে বাকশাল (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ) নামে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করেন। এতে কার্যত সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত হয়, এমনকি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোও ভেঙে ফেলা হয়।

🔻 ঘটনা:

  • ১৫ আগস্ট ১৯৭৫: শেখ মুজিব ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করা হয়।

  • এরপর ক্ষমতা দখল করেন খন্দকার মোশতাক আহমদ, যিনি নিজেই আওয়ামী লীগের একজন নেতা ছিলেন, তবে হত্যার পর সামরিক বাহিনীর সমর্থনে ক্ষমতায় বসেন।

  • মোশতাক ও পরবর্তী সামরিক শাসকরা (জিয়াউর রহমান, এরশাদ) আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দলের বিরুদ্ধে কঠোর দমননীতি চালান।

❌ নিষিদ্ধ ঘোষণা নয়, তবে:

  • আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে গ্রেপ্তার হন, অনেকে গোপনে রাজনীতি করেন বা নির্বাসনে যান (যেমন শেখ হাসিনা তখন জার্মানিতে ছিলেন)।

  • দলটি কার্যত রাজনীতি থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।

  • ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত হয়।


🔴 ২. সেনাশাসন ও রাজনৈতিক দমন (জিয়া ও এরশাদ আমলে)

✅ জিয়াউর রহমানের শাসন (১৯৭৫–১৯৮১):

  • রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর সীমিত স্বাধীনতা ছিল।

  • আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ও কর্মী সরকারের রোষানলে পড়েন।

  • আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রিত ও বাধাগ্রস্ত ছিল, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবির কারণে।

✅ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসন (১৯৮২–১৯৯০):

  • ১৯৮২ সালে সেনাবাহিনী প্রধান এরশাদ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন।

  • তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেন, যার মধ্যে আওয়ামী লীগও ছিল।

  • আওয়ামী লীগ তখন রাস্তায় নামতে পারছিল না, নেতাদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হতো।

📌 তবে, রাজনৈতিক দলগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে শিথিল করা হয়, এবং ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করে (বিএনপি অংশ নেয়নি)।


🔴 ৩. ২০০৭-২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমল (সামরিক ব্যাকিং)

✅ প্রেক্ষাপট:

২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে।

  • তখন রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করা হয়।

  • শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয় (২০০৭ সালে)।

  • চেষ্টা হয়েছিল “দুই নেত্রীকে” (শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া) রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে “রাজনীতির সংস্কার” আনা।

❌ যদিও আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ হয়নি, কার্যত দলের কার্যক্রম সীমিত ছিল এবং নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছিল।

৪..আবার নিষিদ্ধ হয় ১১/০৫/২০২৫ সালে । ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে । গত কালকে। প্রবল আন্দোলনের মুখে কাল আবার তত্বাবধায়ক সরকারে প্রধান 

ডাঃ ইউনুস সহ তার সব উপদেষ্টারা মিলে তাদের গনহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত  আওয়ামী  লীগের  সব কার্যক্রম অনিদৃষ্ট কালের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।।।

🔚 সারসংক্ষেপ:

সময়কাল পরিস্থিতি নিষিদ্ধ ছিল কি? মন্তব্য
১৯৭৫–১৯৮১ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, সামরিক শাসন ❌ (কার্যত নিষ্ক্রিয়) নেতারা গৃহবন্দী/নির্বাসনে, রাজনৈতিক শূন্যতা
১৯৮২–১৯৯০ এরশাদের সেনাশাসন ✅ (আংশিক নিষেধাজ্ঞা) রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা
২০০৭–২০০৮ সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ❌ (কার্যত দমন) শেখ হাসিনার গ্রেপ্তার, রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ

আপনি কি এই বিষয়গুলোর মধ্যে কোনো একটি সময়কাল বা নেতা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান?

Post a Comment

0 Comments